এটা ভালোবাসা ছিল না | ভালোবাসার কষ্টের গল্প ২০২৫

 গল্পের নাম: “ভালোবাসা নয়, বাসনা”

না পাওয়া ভালোবাসা

না পাওয়া ভালোবাসা

আমার নাম আদিব। আমি এই শহরেরই একটি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে।

যখন আমি ভালোবাসতে শিখেছি, তখন আমি বুঝে গিয়েছিলাম—সবাই ভালোবাসে না ‘তোমাকে’, অনেকে ভালোবাসে ‘তোমার পাশে যা আছে’।

আর সেই বিশ্বাসকে সত্যি করে দিয়েছিল মেহরিন।

আমাদের দেখা এক বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি ইচ্ছে করেই আমার পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলাম। পুরনো জামা পরে, সাধারণ চেহারায়, পুরনো ফোন হাতে একদম সাধারন একজন ছাত্র হিসেবে ক্লাসে হাজির হতাম।

মেহরিন ছিল খুব স্মার্ট, খুব সাজগোজপসন্দ, আর চাহিদাসম্পন্ন।

প্রথম থেকেই সে আমার উপর বিরক্ত হতো—কারণ আমি ছিলাম "কম গুরুত্বপূর্ন"।

কিন্তু আমি ভালোবাসতাম। তার হাসি, তার চোখ, তার কথা—সবকিছু।

প্রথম কয়েক মাসে আমি বুঝে ফেলি, সে কখনোই একজন সাধারণ ছেলেকে গুরুত্ব দেবে না।

তবুও আমি থাকতাম পাশে, সাহায্য করতাম নিঃশব্দে। সে যখন কাঁদতো, আমি পাশে থাকতাম ছায়ার মতো, যখন তার প্রেজেন্টেশন বানাতে হতো, আমিই করতাম, নাম থাকতো তার।

একদিন এক সিনিয়র, রাফি ভাই—এক নামকরা ধনী পরিবারের ছেলে, তার প্রতি আগ্রহ দেখায়। মেহরিন বদলে গেল।

সে আর আমার সঙ্গে সময় কাটাত না, কথা বললেও বিরক্তি নিয়ে।

আমি একদিন সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিলাম, “তুমি কি কখনো আমার মতো কাউকে ভালোবাসতে পারো?”

সে হেসে বলেছিল, “ভালোবাসা টাকা দেখে না, কিন্তু আমি আমার জীবনটা নিশ্চয়ই কষ্টে কাটাতে চাই না।”

আমার বুকটা ধক করে উঠেছিল।

আমি সেই রাতেই সিদ্ধান্ত নিই—সময় এসেছে আসল পরিচয় দেখানোর।

সপ্তাহ খানেক পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় অনুষ্ঠানে, আমি হাজির হলাম আমার সত্যিকারের পরিচয়ে।

সুট-টাই পরা, নিজের গাড়ি নিয়ে, পেছনে আমার বাবা—দেশের বিখ্যাত শিল্পপতি।

সবাই অবাক, মেহরিন তো একদম থ!

তাকে যখন আমার পরিচয় বলা হলো, তার চোখ কেবল বিস্ময়ে ভরা।

সে দৌড়ে এলো আমার কাছে, হাসিমুখে বলল, “তুমি কিছু বলো নি কেন?”

আমি তাকিয়ে বলেছিলাম,

“বলিনি, কারণ আমি চাইছিলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো, আমার টাকা নয়।

তুমি আমাকে নয়, আমার ‘ঘর’কে ভালোবেসেছো।

ভালোবাসা পরীক্ষায় ফেল করেছো তুমি, মেহরিন।

আর এখন আমার জীবনে তোমার কোনো স্থান নেই।”

সে তখন কাঁদছিল, অনুতাপে, লজ্জায়।

কিন্তু আমি চলে গিয়েছিলাম—যেখানে ভালোবাসা নেই, সেখানে থেকেও লাভ নেই।

আজও সে মাঝে মাঝে মেসেজ করে, ফোন দেয়।

কিন্তু আমি বদলে গেছি—ভালোবাসাকে শুধু হৃদয় দিয়ে নয়, এখন বুঝে নিতে শিখেছি—কে পাশে থাকতে চায় ‘আমার জন্য’, আর কে চায় ‘আমার সবকিছুর জন্য’।